★পঞ্চলিঙ্গেশ্বর



     আলো কমে আসার সাথে সাথে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিল, আমাদের কড়া ভাবে নির্দেশ দেয়া হোল পাহাড় থেকে নেমে যেতে।  রাতে বন্য জন্তুর আগমনের ভয়ে সবাই সন্ধ্যার আগেই নেমে আসে পাহাড় থেকে !

       

       পঞ্চলিঙ্গেশ্বর মন্দির (ওড়িয়া: ପଞ୍ଚଲିଙ୍ଗେଶ୍ଵର) ওড়িশার বালাসোর জেলায়। এর ভিতরে নাম করা পাঁচটি শিবলিঙ্গের জন্যেই এমন  নামকরণ করা হয়েছে। মন্দিরটি নীলাগিরি পাহাড়ের নিকটে একটি টিলার উপরে রয়েছে (নীল্পগিরিকে পশ্চিম ঘাটের সাথে বিভ্রান্ত হওয়ার দরকার নেই)।

  কথিত আছে যে শিবলিঙ্গগুলি নির্বাসনের সময় ভগবান রামের স্ত্রী সীতা দ্বারা আবৃত ছিল। আরেকটি গল্পে বর্ণিত আছে যে রাজা বনসুরা এই জায়গাতে তার সৌন্দর্যের ভিত্তিতে স্বয়ম্ভু লিঙ্গদের উপাসনা করেছিলেন।   একটি বহুবর্ষজীবী ধারা, যা এই অঞ্চলের প্রধান আকর্ষণ, শিবলিঙ্গগুলির  উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লিঙ্গগুলিকে নিয়মিত ধুয়ে দেয়।  মন্দিরে পৌঁছতে জলের স্রোতের অভ্যন্তরে লিঙ্গগুলি স্পর্শ করতে এবং পূজা করার জন্য স্রোতের সমান্তরালে পাথরের উপর  টানটান করে শুয়ে থাকতে হবে।  

       নীলগিরি বা নীলাগিরি পাহাড়ের মাথায় এই শিব মন্দির ,যা বেশ কতগুলি সিঁড়ি ও চড়াই অতিক্রম করে পৌঁছাতে হয়,  কিন্তু একদমই কষ্টসাধ্য নয়,  পথে আপনি অনেক বিশ্রামের স্থান পাবেন।   

  পাহাড়ি ধারার জলের নীচে শিবলিঙ্গ দৃশ্যমান না হলেও আপনি স্নানের সময় তা হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারবেন।পাহাড়ের উপর থেকে দৃশ্যমান সবুজ সত্যিই মনমুগ্ধকর।   বালাসোর থেকে পঞ্চলিঙ্গেশ্বর যাওয়ার পথে গাড়িওয়ালা কে বললে খূমকুট ড্যামটি দেখিয়ে দেবে,যা একটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।

PHOTO GALLERY 















 
 সন্ধ্যার আগে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক 

পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের পথে 


     ACCOMMODATION 


    হাতে গোনা হোটেল আছে ঠিকই কিন্তু তার ভিতর বলতে গেলে শকুন্তলা নিবাস ও OTDC পান্থনিবাসের খাবার মান তুলনাহীন। যদি একটু বেশি লাক্সারি আর সাজানো গোছানো বাগানের পরিবেশ পছন্দ করেন তাহলে 'সাই ঈশ্বরী হিল ভিউ রিসর্ট' কে বেছে নিতে পারেন, যা ভিউ দেখার জন্য সত্যিই অনবদ্য । OTDC পান্থনিবাসের পিছনে আছে টিলা আর ধানজমি সমন্বিত কয়েক ঘরের গ্রাম,যা সত্যিই খানিকটা সময় কাটানোর জন্য আদর্শ।

       শকুন্তলা নিবাসের রাঁধুনির যাদু সত্যি অকল্পনীয়। 200 টাকা থালির ভিতর আপনি পাবেন ডাল,ভাজা,মাছ/মাংস,দুটো পাঁচ মেশালি তরকারি,মুড়িঘন্ট,অনন্য স্বাদের চাটনি,যা আপনার মনে ট্রিপের বহুদিন পর পর্যন্ত রয়ে যাবে।এখানে গ্রুপে গেলে আপনার জন্য সাঁওতালি নাচ ও বার্বিকিউ এর ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। শকুন্তলা একটি একতলার হোটেল যাতে আপনি পাহাড়ের ভিউ পাবেন না কিন্তু পান্থনিবাসে আপনি সেটা দোতলা থেকে পাবেন।।  
     আর এই দুটি হোটেল পরস্পর মুখোমুখি হওয়ায় এগুলির অবস্থান থেকে মোটামুটি এক কি,মি গেলেই পড়বে মন্দিরের তোরণ এবং হেঁটেই আপনাকে মন্দির অবধি যেতে হবে কারণ এপথে গাড়ি যায় না, মন্দিরের তোরণের সামনে যানবাহন পার্কিং এর জায়গা আছে।  মন্দির পথে নূন্যতম 10 টাকাতেই আপনি প্রসাদ পাবেন, আরো আছে অজস্র পসরার দোকান।  সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠলেই মন্দির চত্বর থেকে দেখা যায় দূরের সবুজ সৌন্দর্য,উপর থেকে নেমে আসা জলের ধারার নীচে হাত দিলেই স্পর্শ পাবেন শিবলিঙ্গ গুলির,যা জলের  উপর থেকে দৃশ্যমান হয় না।এখানে নেমে আসা ঝোরার জলে আপনি স্নান ও সেরে নিতে পারেন।

MEMORIES 

















LINKS OF THE HOTEL 

TRANSPORTATION :-

পঞ্চলিঙ্গেশ্বর বালাসোর জেলার অন্তর্গত। পঞ্চলিঙ্গেশ্বর থেকে নিকটতম শহর বালাসোরও। পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের নিকটতম এনএসি হ'ল নীলগিরি। ভুবনেশ্বর থেকে নীলগিরি এবং বালাসোর উভয়ের জন্য নিয়মিত বাস পরিষেবা রয়েছে ভুবনেশ্বর বিমানবন্দর (200 কিলোমিটার) বা কলকাতা বিমানবন্দর (আড়াইশো কিমি) হয়ে বালাসরে আসতে পারবেন একজন দর্শনার্থী। পঞ্চলিঙ্গেশ্বর এবং বালাসোরের মধ্যে নিয়মিত পরিবহন সুবিধা রয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য এবং ভূতুড়ে রাত্রিযাপন

The Super Cyclone (Orissa, 1999) - the diary of A small boy